আমার ব্লগ তালিকা

সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১০

রংপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীলতা।


রংপুর চিড়িয়াখানায় গাছের আড়ালে-আবডালে, ঝোপের পাশে আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায় যুগলদের। কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে। আর সেই সুযোগে অশ্লীলতা চালায় তারা। এখানে রয়েছে আলো-আধারির রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্টের রান্নাঘরে রয়েছে বিশেষ ধরনের খাট। যেখানে কর্তৃপক্ষকে বাড়তি টাকা দিয়ে চালানো হয় বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড। কিছুদিন আগেও অভিযান চালিয়ে এখান থেকে এক যুগলকে আটক করে পুলিশ।

রংপুরের বিনোদন স্পট হিসেবে সবার পরিচিত ভিন্ন জগত। ৩০ টাকায় টিকেট কিনে যে কেউ অতি সহজে ঢুকতে পারেন এখানে। এখানেও রয়েছে বিশেষ ধরনের রেস্ট হাউজ। যেখানে ঘন্টায় ৩শ‌ থেকে ২ হাজার টাকা ব্যয় করে সময় কাটানো যায় নিরাপদে। এছাড়াও বিভিন্ন স্পটে গাছের আড়ালে ও লেকের পাশে প্রকাশ্যেই চলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। গ্রাহকদের চাহিদার কথা চিন্তা করে এখানেও নিরব থাকেন কতৃপক্ষ।

অন্যদিকে, রংপুরের গঙ্গাচরের লেক ও নদীর ধারের কথা সবারই জানা। এখানেও যুগলদের রয়েছে একান্ত মেলামেশার অবাধ সুযোগ।
এছাড়াও, ক্যান্টনমেন্টের পাশে বিশবেদগঞ্জ ও এর নদীর পাশের বাঁধের এলাকায় প্রকাশ্যেই চলে অশ্লীলতা। যুগলদের সারিবদ্ধভাবে আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়।

রংপুরের অন্যতম প্রাচীন দর্শণীয় স্থান তাজহাটের জমিদার বাড়ি ও জাদুঘরের আশ-পাশের এলাকায় অবাধেই চলে অশ্লীলতা। কর্তৃপক্ষ দেখেও যেন কিছুই দেখে  না। তাই, এ সুযোগে যুগলরা প্রতিনিয়ত ভীড় করছে এখানে।

পীরগঞ্জের আনন্দ নগর নামক স্থানেও প্রতিদিনই ঘটছে বিভিন্ন রকমের অনৈতিক কর্মকাণ্ড এখানেও অধিকাংশ সময় যুগলদের আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়।

পাগলা পীর মোড়ে সিনেমা হলকে ঘিরেও চলে অশ্লীলতা। সম্প্রতি পুলিশ এখানে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করে।

শহরের বিভিন্ন মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, জেলা পরিষদ এলাকায় কমিউনিটি মার্কেটের সামনে সিসিলি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, সুরভী উদ্যানের সামনে কফি হাউজসহ এসব রেস্টুরেন্টের আলো-আধারীর মাঝে চলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড।

এছাড়াও রংপুরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডের আস্তানা। এসব এলাকায় স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের যাতায়াতই বেশী। উল্লেখযোগ্য এলাকাগুলো হলো—দেশী বাংলার পিছনে বাড়ি, ডিসির বাংলোর মোড়ের সার্কিট হাউজের পিছনে ভিআইপি রোডে দ্বিতল ভবনের দ্বিতীয় তলা, কামারপাড়া, কলেজ রোডের আশ্রম, সেনপাড়া, বেগম রোকেয়া কলেজের পাশে বিভিন্ন বাসা বাড়ি, আরসিসিআই স্কুলের সামনে এবং পিছনের বাসা বাড়ি, খাস বাগ, তাজহাট গলাকাটা মোড়ের আশ-পাশের বাসা বাড়ি, বাবু পাড়া, জুট মিলের আশ-পাশের বাসা বাড়ি, বাবু পাড়া জুট মিলের আশ-পাশের বাসা। এসব এলাকায় অবাধে চলে অশ্লীলতা।

শহরের বিভিন্ন হোটেলেও চলছে অশ্লীলতা। প্রেসক্লাবের পাশের ফ্রেন্ডস হোটেল, গোল্ডেন টাওয়ার, আরকে রোডের পর্যটন মোটেল, আওয়ামী লীগ অফিসের পাশের ঢাকা হোটেল, রাজ হোটেল, ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকার হোটেল, মর্ডান মোড়ের হোটেল ডায়মন্ড, শাহীমহল, অর্জন, মাম্পী, অবকাশ, সৌমিক, ট্রাক বাস স্ট্যান্ড এলাকার হোটেল বৈশাখী, সাত মাথা এলাকার সাত মাথা টাওয়ার, ধাপ মেডিকেল এলাকার বিজয় হোটেল।

এছাড়া, ধাপ মেডিকেল এলাকার টার্মিনাল, আরকে রোড এবং সিও বাজার এলাকার বিভিন্ন ক্লিনিকেও চলছে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের রমরমা বাণিজ্য।
শহরের বিভিন্ন স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে প্রকাশ্যেই চলে অশ্লীলতা।
অন্যদিকে, শহরের বিভিন্ন সাইবার ক্যাফেতেও চলছে এসব কর্মকাণ্ড। 
এছাড়া শহরের টাউন হল এলাকার শহীদ মিনার, পাবলিক লাইব্রেরী মাঠ, টাউন হল চত্তরেও তরুণ-তরুণীরা আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকে।

এসব সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই ইভ টিজিংসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটছে। বাড়ছে বিবাহ-বিচ্ছেদ, চুরি-ছিনতাই, রাহাজানি ও হত্যাসহ অন্যান্য অপরাধ। অথচ প্রশাসনের একটু নজরদারিই পারে এসব এলাকাকে অসামাজিক কার্যকলাপ মুক্ত রাখতে। আর তা না হলে ভবিষ্যত প্রজন্মকে ভয়াবহ সামাজিক অবক্ষয়ের কবলে পড়তে হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন