আমার ব্লগ তালিকা

সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১০

নারায়নগঞ্জের, শীতলক্ষা নদীর তীর, ফতুল্লার ভাসমান হোটেল মেরি এন্ডারসন, খানপুর ২শ’ শয্যা হাসপাতাল ও রূপগঞ্জের জিন্দা পার্কে প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীলতা।

নারায়নগঞ্জ শহরের পার্শ্ববর্তী শীতলক্ষা নদীর তীর এলাকা ও নদীর উপরের নৌকাগুলোয় প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীলতা। নদীর তীরের নিবিবিলি পরিবেশ আর নৌকায় রয়েছে নিরাপদ পরিবেশ। ঘন্টায় ১শ’ টাকা খরচ করেই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে চলে আসে এখানে। প্রকাশ্যে আপত্তিকর অবস্থায় বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে সময় কাটায় তারা।

ফতুল্লার ভাসমান হোটেল, যাকে বলে প্রমোদ তরী, মেরি এন্ডারসনের ভিতরে ও এর আশ-পাশের এলাকায়ও প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীলতা। এখানে রয়েছে বার, রয়েছে বিশেষ কেবিন ও হোটেল। রয়েছে কিছু দালাল যাদের ৩শ’ থেকে ২ হাজার টাকা দিলে বিভিন্ন ধরনের জায়গার অশ্লীলতার ব্যবস্থা করে দেয়। সবাই জেনেই এখানে সময় কাটাতে আসে। আর ব্যাপক চাহিদা থাকায় দিন দিনই সবার গোচরেই এখানে চলছে অশ্লীলতা।

অন্যদিকে, প্রেম কানন হিসেবে খ্যাত নারায়নগঞ্জের খানপুর ২শ’ শয্যা হাসপাতাল বেশ পরিচিত। এখানে হাসপাতালের ভিতরে রয়েছে বিশাল বাগান। যার ভিতরে প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীলতা। যুগলরা সারাদিন এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত এখানে অসামাজিক কার্যকলাপ চালায়। সবাই দেখেও না দেখার ভান করে। যেন এগুলো তারা কিছুই বুঝে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কিছু বলে না।

এছাড়া, রূপগঞ্জের জিন্দা পার্কের ভিতরে গাছের আড়ালে-আবডালে ও ঝোপ-ঝাড়ের মাঝে চলছে অশ্লীলতা। যুগলসহ সব ধরনের লোকজন এখানে এসে প্রকাশ্যেই চালায় অসামাজিক কার্যকলাপ।

সোনারগাঁর যাদুঘরের পুকুর পাড়ের পূর্ব পাশ, লেকের পাড়, যাদুঘরের দক্ষিণ পাশের গাছের আড়ালে-আবডালেও আপত্তিকর অবস্থায় যুগলসহ পর্যটকদের বসে থাকতে দেখা যায়।

এসব অশ্লীলতার কবলে পড়ে যুবকরা হারাচ্ছে তাদের সীমাহীন সম্ভাবনা। পড়ছে বিভিন্ন সহিংসতার বেড়াজালে। বাড়তে সহিংস ভালবাসা। -- কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি এসব এলাকার অশ্লীলতা দূর করতে পারবে বলে মনে করেন সচেতনমহল।

সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১০

চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলছে অশ্লীলতা

চাঁদপুরের বড় স্টেশন, নদীর ওপারের চর, নদীর উপরের নৌকা, কতিপয় রেস্টুরেন্ট ও হোটেল এবং যাতায়াতের লঞ্চের কেবিনে অবাধে চলছে অশ্লীলতা। সবাই জানে এসব এলাকায় কি কি ঘটছে। তবু দেখেও না দেখার ভান করে চলছে। উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েরাই এসব এলাকায় বেশী লক্ষ্যণীয়।

জানা যায়-শহরের বড় স্টেশন একটি সৌন্দর্যময় এলাকা। তাই, একটু অবসর পেলেই অনেকে ঘুরতে আসেন এখানে। তবে, বড় স্টেশনের নদীর ওপরে প্রতি ঘন্টায় নৌকায় ২শ’ টাকায় ঘুরে আসা যায়। নৌকায় কাপড়ের বেড়া দিয়ে অশ্লীলতার সুযোগ করে দেয় মাঝিরা।

এছাড়াও, রয়েছে নৌকা যোগে নদীর ওপারে চরে যাবার সুযোগ। বিশাল চরে রয়েছে ঝুপড়ি আর ফাঁকা জায়গা। সেখানে নির্জনে সময় কাটানো যায় বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে। মাঝে মধ্যেই চরে একা পেয়ে হামলা চালায় স্থানীয় বখাটেরা। যুগলদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় টাকা ও মোবাইল। অনেক সময় তাদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় যুগলদের। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এখানে প্রতিদিন লোকজন ভীড় করছে।

অন্যদিকে, চাঁদপুরের কতিপয় রেস্টুরেন্টে দিনে দুপুরে পর্দা টানিয়ে ভিতরে চলছে অশ্লীলতা। ফয়সাল মার্কেটের ওয়েল কাম রেস্টুরেন্ট, কস্তুরি, ধানসিড়ি, কুমিল্লা রোডের আল-ফালাহ রেস্টুরেন্ট, নতুন বাজারের ক্যাফেঝিল, জোড় পুকুর পাড়ের নাইট কুইন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের আলো আধার ও পর্দার ভিতরে অবাধেই চলছে অশ্লীলতা। বাইরের চেয়ে একটু বেশি টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের এসব কাজের সুযোগ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তাই, উঠতি বয়সী যুগলরা প্রতিনিয়ত এসব রেস্টুরেন্টে ভীড় করছে।

এদিকে, চাঁদপুরের বিভিন্ন হোটেলেও প্রতিনিয়ত পুলিশী অভিযানে যুগলদের হাতে নাতে ধরা হচ্ছে। স্কুল ও কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যাই এদের মধ্যে বেশী। হোটেল রজনীগন্ধা, হোটেল অতিথি, হোটেল শ্যামলী, হোটেল তাজ, হোটেল পুরবী ও হোটেল প্রিন্সে দিনে দুপুরেই ঘন্টায় ২শ’ টাকা বুকিং দিয়ে ভিতরে চলছে অশ্লীলতা।

এছাড়াও, চাঁদপুর যাওয়া-আসার মাঝে লঞ্চের কেবিনগুলোতে চলে অশ্লীলতা। মাঝ বয়সী ছেলে-মেয়েরা যাতায়াতকালে লঞ্চের কেবিনগুলোতে অনৈতিক কার্যকলাপ চালায়। সবাই জানে লঞ্চের কেবিনগুলোর কথা ভিতরে কি চলে। কিন্তু বাড়তি টাকা পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ কিছুই বলে না।

বন্ধুত্ব আর ভালবাসার নামে এসব নগ্ন অশ্লীলতাকে দূর করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে ভালবাসার কবলে পড়ে কাউকে হারাতে হবে না সম্ভ্রম। হবে না আত্মহত্যাসহ কোন সহিংসতা।

রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১০

প্রেমিকের পরকিয়ার কথা জেনেই আত্মহত্যা করে জেনি

প্রেমিক লালন সম্পর্কে খারাপ ধারণার পরই আত্মহত্যা করে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গালর্স কলেজের ছাত্রী তারানা শিরিন জেনি। রমজানের ঈদের পরে গোপনে তারা বিয়ে করে। তার কিছুদিন পরেই জেনি জানতে পারে, লালনের সঙ্গে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে প্রায় তাদের মাঝে ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত বুধবার মোবাইল ফোনে ঝগড়ার এক পর্যায়ে জেনিকে লালন ডিভোর্স দেয়ার কথা বলে। এরপরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় জেনি। তানিশা আত্মহত্যার চেষ্টা সম্পর্কে চিরকুটের মাধ্যমে তার মাকে লিখেছেন, ‘পড়াশোনা ও তোমার সঙ্গে প্রেম। পড়ালেখা না করতে পারায় নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে, পৃথিবীর সবাই স্বার্থপর। এতো চেষ্টা করেও মরতে পারিনি, কৈ মাছের প্রাণ।’
এদিকে, তানিশার অবস্থা দ্বিতীয় দিনেও তেমন উন্নতি হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করা হয় তার। দুপুরে, তানিশার জ্ঞান ফিরে আসলে তাকে রাজধানীর লালমাটিয়ার নিরুপম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তানিশার মা হাসিনা সালাম জানান, তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা তানিশার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে তারানা শিরিন জেনি ও তানিয়া সুলতানা তানিশা মালিবাগের কেয়া প্রিয়া মহিলা হোস্টেলের ২য় তলার একটি কক্ষে এক সঙ্গে বিষ পান করে। পরে জেনি মারা যায়। তানিশা আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
পুলিশের বক্তব্য: মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. জাফর আলী বলেন, নিহত জেনির লেখা একটি ডায়েরি পাওয়া গেছে। ডায়েরিতে পরিবারের অবহেলা ও প্রেমিক লালনের সঙ্গে ঝগড়ার কথা লিখেছে। তবে, সে ডায়েরিতে তার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেনি। এছাড়াও লালনের তেমন কোন পরিচয় সম্পর্কে লিখেনি। জেনি তার বান্ধবী তানিশার মোবাইল ফোনে লালন নামের যুবকের সঙ্গে কথা বলতো। তাই, তানিশার মোবাইল ফোনের কল লিস্ট তদন্ত করে দেখছি। তবে, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে জেনি আত্মহত্যার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। লালন নামের যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ও আত্মহত্যার পেছনে উস্কানি আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কে এই লালন: হোস্টেলের এক ছাত্রী জানিয়েছেন, লালনের প্রকৃত নাম ইকবাল হোসেন ওরফে লালন। সে ভালো গান এবং গিটার বাজাতে পারে। শুনেছি, তাদের মাঝে এক বছর ধরে প্রেম চলছে। লালন তেজগাঁওতে একটি মেসে থাকে। নিহত জেনির বান্ধবী তানিশা জানান, লালনের সঙ্গে তারা বেশ কয়েক বার কথা বলেছেন। তার চরিত্র খারাপ শুনে জেনি ভেঙে পড়ে।
লালন আরও এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতো শুনেছি। তারা দু’জন এক সঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা সম্পর্কে বলেন, জেনি সবার ওপর অভিমান করে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। জেনি আত্মহত্যার বিষয়টি আমাকে জানায়। তখন আমিও (তানিশা ) তার সঙ্গে আত্মহত্যা করার কথা বলি। তানিশা বলেন, এসএসসিতে এ প্লাস পেয়েছিলাম। এইচএসসিতেও এ প্লাস পেয়ে ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন। কয়েক মাস ধরে পড়ালেখা না হওয়ায় মন ভেঙে গেছে। তাই দু’জনে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

শনিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১০

চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যেই চলছে অশ্লীলতা

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সি বিচ ও পার্কি সি বিচে প্রকাশ্যেই চলছে অশ্লীলতা। সেইসাথে চলছে মাদকের অবাধ বেচাকেনা। সবাই দেখেও যেন না দেখার ভান করছে। এসব বিচের সামনে খাবারের দোকাগুলোর পিছনে রয়েছে ছোট ছোট খুপড়ি। এগুলোতে বান্ধবীদের নিয়ে এসে সময় কাটানোর পাশাপাশি অবাধে চালানো হয় অশ্লীলতা। কিছু বাড়তি টাকার বিনিময়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ এখানে সুযোগ করে দিচ্ছে তরুণ-তরুণীদের। প্রশাসনও দেখেও না দেখার ভান করছে। বিচগুলোতে সাধারণত উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের আনাগোনাই বেশী। তবে, বিশ্ব ভালবাসা দিবস, পহেলা বৈশাখ, বিজয় দিবসসহ বিশেষ দিনগুলোতে বান্ধবীদের নিয়ে এখানে সময় কাটান অনেকে।
এছাড়া, লালখান বাজারের জিলাপির পাহাড় এলাকায় তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশা সবার চোখে পড়ে। এখানে প্রকাশ্যে দিবালোকে ঘাসের ঝোপ-ঝাড় ও গাছের আড়ালে-আবডালে খুবই আপত্তিজনকভাবে সময় কাটায় তারা।

অন্যদিকে, শহরের চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলোর আলো আধারের মাঝে চলে অশ্লীলতা। যুগলরা প্রতিনিয়ত এখানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চালায় এসব কাজকর্ম। কর্তৃপক্ষ দেখেও যেন না দেখার ভান করে।

এছাড়া, চট্টগ্রাম সিটি কলেজের পাশে নিউ মার্কেটের আড্ডাস্থলে, কমার্স কলেজ ও আগ্রাবাদের শিশু পার্ক এলাকায়ও চলছে অশ্লীলতা। এখানে জোড়ায় জোড়ায় যুগলরা
প্রায়ই আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। এসব এলাকায় প্রায়ই ঘটে ছিনতাই ও সহিংসতা।

তাছাড়া, চট্টগ্রাম শহর থেকে বেশ দূরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডিস হল, ফরেস্ট্রি বিভাগের পাহাড় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের আড়ালে-আবডালে অবাধে চলছে অশ্লীলতা। সবাই জানে এসব জায়গায় প্রতিনিয়ত কি ঘটছে। তবু, সব কিছু জেনেই বিশেষ দিনগুলোতে এসব এলাকায় ভীড় জমায় উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা। অনেকে আবার আসে এসব অশ্লীলতা দেখতে।

এসব অশ্লীলতার কারণে চট্টগ্রামের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে সহিংসতা। বন্ধুত্ব আর ভালবাসার নামে চলছে অশ্লীলতা। ঘটছে, চুরি, ছিনতাই আর প্রেমে ব্যর্থ ও সম্ভ্রম হারিয়ে ঘটছে আত্মহত্যার ঘটনা। যাকে বলে সহিংস ভালবাসা। এসব অশ্লীলতা আর সহিংস ভালবাসা থেকে দূরে থাক সবাই-সুন্দরভাবে গড়ে উঠুক নতুন প্রজন্ম—এমন প্রত্যাশা সবার।

রাজধানীর একটি হোস্টেল কক্ষে ২ ছাত্রীর বিষপান * একজনের মৃত্যু * অন্যজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

রাজধানীর মালিবাগের একটি হোস্টেলে গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় একইসঙ্গে বিষপান করে তারানা শিরিন জেরিন (১৮) নামে এক ছাত্রীর মৃত্যু ঘটেছে এবং অপর ছাত্রী তানিশা আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। জেরিন সিদ্ধেশ্বরী মহিলা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং তানিশা শাহজাহানপুর মির্জা আব্বাস ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী।
রমনা থানার এসআই ডিউটি অফিসার আবদুল মোতালেব জানায়, বিশ নম্বর পশ্চিম মালিবাগের আরিফ কমিশনারের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় কেয়া পিয়া মহিলা হোস্টেলে জেরিন ও তানিশা এক রুম ভাড়া নিয়ে থাকত। গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় তারা একসঙ্গে বিষপান করে। তাদের গোঙানির শব্দ শুনে অন্য রুমের ছাত্রীরা এসে বিছানার ওপর তাদের পড়ে থাকতে দেখে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জেরিন ও তানিশাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায় এবং অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল ৮টায় কর্তব্যরত ডাক্তার জেরিনকে মৃত ঘোষণা করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তানিশা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ডায়রি ও হিলাথিয়ন লেখা তিনটি খালি বোতল উদ্ধার করেছে। ডায়রিতে প্রেম ও হতাশাজনিত কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। বোতলে কীটনাশক বিষ ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার জাফর আলী জানান, একই কক্ষে একই সঙ্গে দু'জনের বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা বিরল। বিষয়টি হত্যা নাকি আত্মহত্যা চিকিৎসাধীন তানিশার কাছ থেকে জানা যাবে। পুলিশ এ ঘটনায় হোস্টেল পরিচালক আবদুল রাজ্জাককে আটক করেছে। জেরিনের চাচা একেএম শামসুদ্দিন রমনা থানায় বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। জেরিনের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নোয়াখেলা গ্রামে এবং তানিশার বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ায়।

ইভটিজারকে কানে ধরে উঠবস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক মহিলাকে ইভটিজিং করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত শুক্রবার এক ইভটিজারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০০ বার কানে ধরে উঠবস করান।
জানা যায়, শুক্রবার সকালে পৌর সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার রাস্তা দিয়ে এক মহিলা বাজার করে বাড়িতে যাওয়ার সময় উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের কমলপুর কলেজ পাড়ার মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র আব্দুস সাত্তার (৩৫) ইভটিজিং করে। এ ঘটনার পর নবীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক করিম বিএসসি থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করলে, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই ইভটিজারকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট সামছুল ইসলাম মেহেদী বিকালে নবীনগর থানা চত্বরে এ ইভটিজারের বিরুদ্ধে ইভটিজিং করার অভিযোগে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও জনসম্মুখে ১০০ বার কানে ধরে উঠবস করান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওসি রূপক কুমার সাহা, এডভোকেট শিব সংকর দাস, এসআই আব্দুল মালেকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১০

পরকীয়ায় ভাঙছে ঘর : ছন্নছাড়া জীবন সংসার

আট মাস আগে রাজধানীর বাড্ডার নীলা মেহরুনকে বিয়ে করেছিলেন হাসান আলী। নবদম্পতির সংসার-জীবন সুখেই কাটছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে হাসান জানতে পারেন প্রিয়তমা স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত। অন্য যুবকের সঙ্গে রয়েছে স্ত্রীর গোপন প্রণয়। স্বামীর অজান্তে সে মোবাইলে প্রেমিকের সঙ্গে খোশ গল্প করে। প্রথমদিকে হাসান না বোঝার ভান করে এড়িয়ে যায়। কিন্তু বেশিদিন আর চাপা থাকেনি। হাসান সবকিছু বুঝতে পারেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্টি হয় বিরোধ। সদ্যবিবাহিত হাসান ক্রমেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা নেন। বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে হোটেল কক্ষ ভাড়া করে ঠাণ্ডা মাথায় স্ত্রীকে খুন করেন।
পরে তিনি নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দিয়ে অকপটে সবকিছু স্বীকার করেছেন। এ ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার রাজধানী ঢাকাতেই। পরকীয়ার কারণে এ ধরনের অসংখ্য ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। শুধু যে স্ত্রীর প্রাণ গেছে তা-ই নয়, স্বামীকেও প্রাণ দিতে হচ্ছে। স্ত্রী তার পরকীয়া প্রেমিক ও ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে খুন করাচ্ছেন। কখনও বা গর্ভধারিণী মায়ের সামনে সন্তানকেও খুন করার ঘটনা ঘটছে। পরকীয়ার টানে ভেঙে যাচ্ছে সাজানো সংসার। তছনছ হয়ে যায় সংসার-জীবন। ঘটছে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। কেউ বা ঘটনার পর নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দেন। কেউ বা গ্রেফতারের পর অকপটেই স্বীকার করেন নিজের কৃতকর্ম। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মামলা দায়েরের ঘটনাও ঘটছে। এসব ঘটনায় সন্তানের ভবিষ্যত্ হয়ে যায় অনিশ্চিত। বাবা অথবা মায়ের মৃত্যুর পর অথবা জেলে গেলে সন্তাকে আত্মীয়-স্বজনের কাছে আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর উপায় থাকে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান চৌধুরী বলেন, দিন দিন সমাজের যে অবক্ষয় হচ্ছে তা থেকে আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করে আনা উচিত। বিশেষ করে, আকাশ সংস্কৃতি থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ততটাই মঙ্গল। হিন্দি সিরিয়ালগুলো যতটা কম দেখা যায় ততই ভালো। এসব সিরিয়াল থেকে ভালো কিছু শেখা যায় না; বরং অনৈতিক কাজে প্ররোচিত করে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, তাদেরও নিজেদের নৈতিক চরিত্রের পরিবর্তন ঘটানো দরকার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ থেকে জানা যায়, প্রতি বছর প্রায় শতাধিক নারীর মৃত্যু হয় পরকীয়ার কারণে। এর মধ্যে বেশিরভাগ মৃত্যু রহস্যজনক বলে রেজিস্ট্রি হয়ে থাকে। গৃহবধূ ছাড়াও স্বামী এবং স্বজনরাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে থাকেন। গৃহবধূদের মধ্যে অনেকেই আত্মহত্যা করে থাকেন। আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। অপমৃত্যুর মামলাগুলোর তদন্তে খুব বেশি অগ্রগতি হয় না। একপর্যায়ে ধামাচাপা পড়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের ডোম সেকেন্দার আলী জানান, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় তিনি বুঝতে পেরেছেন গলায় ফাঁস দিয়ে ও বিষপানে আত্মহত্যার বেশিরভাগ ঘটনাই পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটে থাকে। আর বেশিরভাগ পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয় স্বামী-স্ত্রীর পরকীয়া অথবা সংসারে অভাব-অনটনের কারণে। তবে যৌতুকের কারণেও পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শাহবাগ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, বনানীর আবাসিক হোটেলে হাসান আলী তার স্ত্রীকে খুন করেন। হত্যার পর তিনি হোটেল থেকে পালিয়ে যান। পরে হাসান নিজে শাহবাগ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করায় ঘটনা প্রকাশ পায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের আগেই তিনি অকপটে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন। ওসি বলেন, যে কারণেই হোক স্ত্রীকে তিনি হত্যা করেছেন। পুলিশের হাতে তাকে ধরা দিতেই হতো। বিবেকের তাড়নায় হোক বা ভয়ে হোক, হাসান আইনের হাতে ধরা দিতে বাধ্য হয়েছেন। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, পরকীয়ার কারণে বিভিন্নভাবে স্ত্রীকে খুন করার ঘটনা ঘটছে। হোটেলে কক্ষ ভাড়া করে, বাড়ি ভাড়া নিয়ে, বিষপান করিয়ে ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয় স্ত্রীকে। এসব হত্যারহস্য উদঘাটনে পুলিশকে বেগ পেতেও হয়। অনেক ঘটনার রহস্য উন্মোচন করাও সম্ভব হয় না।

বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান জানান, বাবা-মায়ের কারণে অনেক সময় সন্তানরা বিপথগামীও হতে পারে। কোনো কারণে যদি মা অথবা বাবার মৃত্যু হয় অথবা একজন জেলে থাকে, এ অবস্থায় সন্তান নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বাবার কারণে ঘটনা ঘটলে সন্তানের ভরণ-পোষণের জন্য মা-ই অগ্রাধিকার পান। মা না থাকলে খালা অথবা নানি সন্তানের দায়িত্ব নেন। এলিনা খান বলেন, এ ধরনের পরিবেশে বড় হওয়া সন্তান একদিন তাদের বাবা-মায়ের ঘটনা জানতে পারবে। তাই আগে থেকেই সন্তানকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখা এবং মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেয়া উচিত।
কেস স্টাডি : নারায়ণগঞ্জে স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক জেনে ফেলায় স্বামীকে ১৩টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন পুশ করে অচেতন করে রেখেছিলেন একটি এনজিওর সভানেত্রী রহিমা খাতুন লিজা। স্বামী আবদুল জলিল ভূঁইয়াকে চারদিন ধরে ঘরের ভেতর শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়। লিজার অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় তিনি তার স্বামী আবদুল জলিল ভূঁইয়াকে প্রেমিক দিপুর সহায়তায় চারদিন ধরে বাড়ির একটি ঘরে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন। গত ১৩ অক্টোবর সকালে এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে লিজা ও তার প্রেমিক দিপুকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।

লিজার দেবর আলাল ভূঁইয়া জানান, শহরের পাইকপাড়ার ভূঁইয়াপাড়া এলাকার বাড়িতে তার বড় ভাই আবদুল জলিল ভূঁইয়া স্ত্রী রহিমা খাতুন লিজা ও ২ মেয়ে দোলা ও মৌকে নিয়ে বসবাস করতেন। তিনতলা বাড়িটির মালিক আবদুল জলিল। এক ও দুইতলা ভাড়া দেয়া হয়েছে। তৃতীয় তলায় ভাই পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তৃতীয় তলারই দুটি কক্ষে ভাবী লিজার নারী কল্যাণ সংস্থা নামে একটি এনজিও ছিল। লিজা ওই এনজিওর সভানেত্রী। সংস্থার ম্যানেজার ছিলেন দিপু নামের এক যুবক। ওই যুবকের সঙ্গে লিজার পরকীয়া সম্পর্কের কথা জেনে ফেলায় তার ভাই জলিলকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আবদুল জলিলকে শিকল দিয়ে ঘরে আটকে রাখার পাশাপাশি এ ঘটনা যাতে তিনি বাইরের কাউকে জানাতে না পারেন, সেজন্য চারদিন ধরে ১৩টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন তার শরীরে পুশ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার এবং জলিলকে উদ্ধার করে।

গত ১১ জুন স্বামীর পরকীয়ার কারণে রাজধানীর জুরাইনে মা তার দুই অবুঝ সন্তান নিয়ে একসঙ্গে বিষ পান করে আত্মহত্যা করেন। পূর্ব জুরাইনের আলমবাগ এলাকায় সাংবাদিক শফিকুল কবিরের বাসার বেডরুম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হচ্ছেন সাংবাদিক শফিকুল কবিরের ছেলে রাশেদুল কবিরের স্ত্রী ফারজানা কবির রীতা (৩৫) এবং তার দুই সন্তান কবির ইশরাত পবন (১৩) ও মেয়ে রাইসা রেশমি পায়েল (১১)। নিহতদের আত্মীয়-স্বজনরা অভিযোগ করেন, রীতার স্বামী রাশেদুল কবিরের সঙ্গে স্মৃতি নামে তার এক আত্মীয়ার পরকীয়া ছিল। দেড় বছর আগে তিনি ওই মেয়েকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয়বার বিয়ের ঘটনাটি ছয় মাস আগে পরিবারের অন্যান্য সদস্য এ সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। এ কারণে দুই সন্তানসহ আত্মহননের পথ বেছে নেন রীতা। এ ঘটনায় শফিকুল কবির, তার ছেলে রাশেদ ও স্মৃতিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর আগে পরকীয়ার কারণে রাজধানীর আদাবর এলাকায় গত ২৪ জুন পাঁচ বছরের শিশু সামিউলকে মায়ের সামনেই হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়শা হুমায়রা ও প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ঘটনার কিছুদিন পরই গত ৪ আগস্ট খিলগাঁও এলাকায় মায়ের পরকীয়ার কারণে খুন হয় সাড়ে তিন বছরের শিশু তানহা। শিশুটির লাশ গুম করার জন্য ফ্লাটের কার্নিশ থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক রেজাউল করিম রাজু ও ইয়াসমানি তমাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। নিহত তানহার বাবা ফারুক গাজী সাংবাদিকদের বলেন, পরকীয়ার কারণেই তার জীবনে এ মর্মান্তিক অবস্থার সৃষ্টি হলো।

ইভ টিজিংয়ের শাস্তি দিলো আদালত

ইভটিজিং রোধে আদালত গতকাল ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুরে ৪ ইভটিজারকে কারাদণ্ড দিয়েছেঝিনাইদহে ভ্রাম্যমাণ আদালত রুবেল নামের এক ইভটিজারকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ইভটিজিং করার অভিযোগে ২ স্কুল ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে। অন্যদিকে, শরীয়তপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এক যুবককে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, রাস্তায় জেএসসি পরীক্ষার্থীদের ইভটিজিং করার সময় ঝিনাইদহে ভ্রাম্যমাণ আদালত রুবেল (২০) নামে এক ইভটিজারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে সদর থানার ওসি ছগির মিঞা জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় ঝিনাইদহ সরকারি বালক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে জেএসসি পরীক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করছিল ওই ইভটিজারএ সময় ঝিনাইদহ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র মো. রুবেলকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশপরে ইভটিজিং প্রতিরোধে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজেবুর রহমান জানান, মেয়েটি অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা দিতে আসছিলঘটনার সময় মেয়েটির ভাই প্রতিবাদ করলে ইভটিজার রুবেল তাকে ছুরিকাঘাত করে

গোপালগঞ্জ ও মুকসুদপুর প্রতিনিধি জানান, মুকসুদপুরে এক স্কুলছাত্রীকে ইভটিজিং করার অভিযোগে স্কুলছাত্র মঞ্জু সিকদারকে ২০ দিন ও দুলাল শেখকে  ১ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে মোবাইল কোর্টগতকাল বিকাল ৫টায় মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. পারভেজ রায়হান তাদেরকে এ সাজা প্রদান করেনথানার ওসি একেএম লিয়াকত আলী জানিয়েছেন- মুকসুদপুর থানার জলিরপাড় ইউনিয়নের বানিয়ারচর গ্রামের জলিরপাড় স্কুলের এসএসসি পরিক্ষার্থী মল্লিকা চক্রবর্তী গতকাল সকালে এসএসসির ফরম পূরণ করতে স্কুলে যাচ্ছিলবেলা ১১টায় সে বানিয়ারচর খেয়াঘাটে পৌঁছলে জলিরপাড় গ্রামের স্কুলছাত্র মুঞ্জু সিকদার ও একই গ্রামের দুলাল সেখ মোবাইল দিয়ে মল্লিকার ছবি তোলেমল্লিকা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে তারা ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে দেয়কিন্তু মল্লিকা ঘটনাটি মহিলা ইউপি সদস্য শিপ্রা মহন্তসহ এলাকার লোকজনকে জানায়বিষয়টি  সমাধান করার জন্য শিপ্রা উভয়কে নিয়ে বৈঠকে বসেনবৈঠক চলাকালে মল্লিকাকে চুল ধরে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে দুলালের বোন লাকীখবর পেয়ে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই ফারুক ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুঞ্জু ও দুলাল সেখকে গ্রেপ্তার করেবিকাল ৫টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ রায়হান ঘটনাস্থলে পৌঁছে মঞ্জু সিকদারকে ২০ দিন ও দুলাল সেখকে ১ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেএ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান রবিউল আলম, থানার ওসি একেএম লিয়াকত আলী ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন


শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ধনই গ্রামের রবিন সরদার ইভটিজিংয়ের দায়ে শাস্তি পেয়েছেনইভটিজিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত রবিনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেনশরীয়তপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম উপল ভট্টাচার্য গতকাল বেলা ১১টায় এ রায় দেনমামলা সূত্রে জানা গেছে, বখাটে রবিন সরদার ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্কুলে যাতায়াতের পথে উত্ত্যক্ত করতএ ঘটনা নিয়ে এলাকায় সালিশ-দরবার হলেও রবিন তার বখাটেপনা থেকে নিবৃত্ত হয়নিগত ২৩শে জুন ডামুড্যা থানার পুলিশ উত্ত্যক্ত করার সময় রবিনকে হাতেনাতে আটক করে২৪শে জুন ডামুড্যা থানার সহকারী উপপরিদর্শক ইলিয়াস হোসেন বাদী হয়ে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন৩রা জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়২৬শে আগস্ট মামলাটি বিচারের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়৫ই অক্টোবর আদালত অভিযোগ গঠন করে২০শে অক্টোবর থেকে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ করেঅভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল আদালত রবিনকে এ শাস্তি দেন

বুধবার, ১০ নভেম্বর, ২০১০

ইভটিজিং : একজনের ১৫ দিন জেল

পিরোজপুরে ইভটিজার দুলাল গাজীকে (২২) ১৫ দিনের জেল দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতনতুন সংশোধিত ইভটিজিং আইনের আওতায় দেশে দ্বিতীয় রায় এটিবুধবার, সন্ধ্যায় গেজেটের কপি পেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট তরফদার সোহেল রহমান এ আদেশ দেন স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর সদর উপজেলার হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে স্কুল ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার সময় বুধবার দুপুর ২টায় দুলাল গাজীকে গ্রেফতার করে পুলিশখবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট তরফদার সোহেল রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হনতাক্ষণিক বিচার প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে গেজেট না আসায় তিনি এ বিচার করতে নিষেধ করেন পরে সন্ধ্যায় বিশেষ ব্যবস্থায় গেজেটের কপি এনে উক্ত ইভটিজারকে ১৫ দিনের আটকাদেশ দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু যাহিদ জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আকরামুল ইসলাম ও এসআই হান্নান হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে দুলাল গাজীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে

বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০১০

প্রেমের কারণেই খুন হয়েছে টাঙ্গাইল বাসাইলের স্কুলছাত্র সুজন

টাঙ্গাইলের বাসাইলের মিরিকপুর গঙ্গাচরণ তপশিলি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র সুজন কুমার সরকার (১৮) সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় খুন হয়েছে বলে গ্রেফাতারকৃত দুই আসামির জবানবন্দি থেকে জানা গেছেতবে, এ খুনের মূলে রয়েছে প্রেমিকার ভাইথানা পুলিশ অবশ্য প্রেমিকা এবং তার ভাইয়ের নাম প্রকাশ করতে নারাজ  

উল্লেখ্য, নিহত সুজন উপজেলার সৈদামপুর গ্রামের সুভাস চন্দ্র সরকারের ছেলে গত ১৯ অক্টোবর থেকে খোঁজ না পাওয়া সুজনের গলিত লাশ গত ২২ অক্টোবর স্কুলের টয়লেটের কূপ থেকে উদ্ধার করে বাসাইল থানা পুলিশপরে উদ্ধারকৃত সুজনের মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রাশড়ার কালাম মিয়ার ছেলে জামাল মিয়া (১৫) ও নাইকানী বাড়ির আলাল মিয়ার ছেলে আকাশসহ (১৫) ৬ জনকে গ্রেফতার করেপ্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ৪ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়অভিযুক্ত জামাল ও আকাশ একই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র তারা দু'জনেই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে
 
জবানবন্দির সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা বাসাইল থানার এসআই শ্যামল দত্ত জানান, মিরিকপুর গঙ্গাচরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমঘটিত কারণে একই স্কুলের ছাত্র সুজন ও জামাল মিয়ার শত্রুতা থাকায় আসামিরা একমাস আগে থেকেই সুজনকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিলপরে ১৯ অক্টোবর স্কুল ছুটির পর বিকেল ৩টার সময় আসামিরা সুজনকে কৌশলে স্কুলের দ্বিতল ভবনের ছাদের উপরে নিয়ে যায়হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাই সুজনের বন্ধু হওয়ায় সে তাদের সঙ্গে ছাদে ওঠেতারা স্কুলের ছাদে বসে প্রায় ১ ঘণ্টা আড্ডা দেয়ার একপর্যায়ে জামাল তার কোমরে থাকা চাপাতি দিয়ে সুজনের ঘারে কোপ দেয়সে কোপে কিছু না হওয়ায় আবার জামাল গলায় কোপ দিলে সুজন মাটিতে লুটিয়ে পরে এবং ঘটনাস্থলেই নিহত হয়

হত্যার পর সুজনের লাশ ছাদে রেখেই তারা চলে আসেরাত ৮টার সময় আবার তারা স্কুলের পিছনে গাছ বেয়ে ছাদে ওঠে সুজনের লাশ নিচে ও হত্যাকা-ে ব্যবহৃত চাপাতি পাশের ডোবায় ফেলে দেয়পরে তারা লাশ স্কুলের টয়লেটের ট্যাংকিতে রেখে চলে যায়এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেতাদের গ্রেফতারে পুলিশ ব্যাপক তপরতা চালাচ্ছে
 
অন্যদিকে, বাসাইল থানা পুলিশ সুজনের প্রেমিকা একই স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী নাবালিকা হওয়ায় নাম প্রকাশে অনিহা প্রকাশ করেছেথানার এসআই শ্যামল দত্ত জানান, সুজনের প্রেমিকা নাবালিকা এ জন্য তার নাম বলা যাবে নাকারণ নাম বললে মেয়েটির জীবন নষ্ট হয়ে যাবে
 
এদিকে, পুলিশের এ বক্তব্যে সুজনের পিতামাতা ও আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসীর মনে সন্দেহ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছেতারা অভিযোগ করে বলেন, সুজনের প্রেমিকা ওই স্কুলছাত্রী ও তার ভাইকে পুলিশ আড়াল করার চেষ্টা করছেপ্রেমিকার ভাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূল আসামিতাকে গ্রেফতার করলেই এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সব আসামির নাম বেরিয়ে আসবেতারা তাকে অতিদ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান