প্রেমিক লালন সম্পর্কে খারাপ ধারণার পরই আত্মহত্যা করে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গালর্স কলেজের ছাত্রী তারানা শিরিন জেনি। রমজানের ঈদের পরে গোপনে তারা বিয়ে করে। তার কিছুদিন পরেই জেনি জানতে পারে, লালনের সঙ্গে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে প্রায় তাদের মাঝে ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত বুধবার মোবাইল ফোনে ঝগড়ার এক পর্যায়ে জেনিকে লালন ডিভোর্স দেয়ার কথা বলে। এরপরই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় জেনি। তানিশা আত্মহত্যার চেষ্টা সম্পর্কে চিরকুটের মাধ্যমে তার মাকে লিখেছেন, ‘পড়াশোনা ও তোমার সঙ্গে প্রেম। পড়ালেখা না করতে পারায় নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে, পৃথিবীর সবাই স্বার্থপর। এতো চেষ্টা করেও মরতে পারিনি, কৈ মাছের প্রাণ।’
এদিকে, তানিশার অবস্থা দ্বিতীয় দিনেও তেমন উন্নতি হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করা হয় তার। দুপুরে, তানিশার জ্ঞান ফিরে আসলে তাকে রাজধানীর লালমাটিয়ার নিরুপম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তানিশার মা হাসিনা সালাম জানান, তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা তানিশার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে তারানা শিরিন জেনি ও তানিয়া সুলতানা তানিশা মালিবাগের কেয়া প্রিয়া মহিলা হোস্টেলের ২য় তলার একটি কক্ষে এক সঙ্গে বিষ পান করে। পরে জেনি মারা যায়। তানিশা আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
পুলিশের বক্তব্য: মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. জাফর আলী বলেন, নিহত জেনির লেখা একটি ডায়েরি পাওয়া গেছে। ডায়েরিতে পরিবারের অবহেলা ও প্রেমিক লালনের সঙ্গে ঝগড়ার কথা লিখেছে। তবে, সে ডায়েরিতে তার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেনি। এছাড়াও লালনের তেমন কোন পরিচয় সম্পর্কে লিখেনি। জেনি তার বান্ধবী তানিশার মোবাইল ফোনে লালন নামের যুবকের সঙ্গে কথা বলতো। তাই, তানিশার মোবাইল ফোনের কল লিস্ট তদন্ত করে দেখছি। তবে, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে জেনি আত্মহত্যার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। লালন নামের যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে ও আত্মহত্যার পেছনে উস্কানি আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কে এই লালন: হোস্টেলের এক ছাত্রী জানিয়েছেন, লালনের প্রকৃত নাম ইকবাল হোসেন ওরফে লালন। সে ভালো গান এবং গিটার বাজাতে পারে। শুনেছি, তাদের মাঝে এক বছর ধরে প্রেম চলছে। লালন তেজগাঁওতে একটি মেসে থাকে। নিহত জেনির বান্ধবী তানিশা জানান, লালনের সঙ্গে তারা বেশ কয়েক বার কথা বলেছেন। তার চরিত্র খারাপ শুনে জেনি ভেঙে পড়ে।
লালন আরও এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতো শুনেছি। তারা দু’জন এক সঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা সম্পর্কে বলেন, জেনি সবার ওপর অভিমান করে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। জেনি আত্মহত্যার বিষয়টি আমাকে জানায়। তখন আমিও (তানিশা ) তার সঙ্গে আত্মহত্যা করার কথা বলি। তানিশা বলেন, এসএসসিতে এ প্লাস পেয়েছিলাম। এইচএসসিতেও এ প্লাস পেয়ে ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন। কয়েক মাস ধরে পড়ালেখা না হওয়ায় মন ভেঙে গেছে। তাই দু’জনে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন